Skip to main content

বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ প্রশিক্ষণ




Image result for বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ


মাছ চাষে আপনিও হতে পারেন স্বাবলম্বী।


বায়োফ্লক পদ্ধতিতে পানি ব্যবস্থাপনা ও ফ্লক তৈরী করার কলাকৌশল ….........

বায়োফ্লক একটি সায়েন্টফিক ফিশ কালচার সিস্টেম যাতে অনেক কিছু জানা ও বোঝার দরকার আছে।

বায়োফ্লকে মাছ চাষের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা ও ফ্লক একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। যেকোন মাছ বা চিংড়ি চাষ বা বায়োফ্লক প্রজেক্ট করার আগে পানির উৎস কি হবে এবং তার গুণাগুণ বা ব্যবহারের উপযোগীতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা জরুরী।
পানির উৎসঃ গভীর নলকূপ, সমূদ্র, নদী,বড় জলাশয়,লেক,বৃষ্টি ইত্যাদির উৎসের পানি গুণ মান ভাল থাকলে ব্যবহার করা যায়।

বায়োফ্লকের জন্য উপযোগী
পানি তৈরীঃ প্রথমে ট্যাংক ব্লিচিং পাউডার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এর পর নির্বাচিত পানির গুণাগুণ পরীক্ষা করে পানি প্রবেশ করাতে হবে।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে পানির গুণাবলীঃ
১. তাপমাত্রা - ২৫ - ৩০ ° C
২. পানির রং - সবুজ, হালকা সবুজ, বাদামী।
৩. দ্রবীভূত অক্সিজেন - ৭- ৮ mg/L
৪. পিএইচ - ৭.৫ - ৮.৫
৫. ক্ষারত্ব - ৫০ - ১২০ mg/L
৬. খরতা - ৬০ - ১৫০ mg/ L
৭. ক্যালসিয়াম - ৪ - ১৬০ mg/L
৮. অ্যামোনিয়া - ০.০১ mg/L
৯. নাইট্রাইট - ০.১ - ০.২ mg/L
১০. নাইট্রেট - ০ - ৩ mg/L
১১. ফসফরাস - ০.১ - ৩ mg/L১২. H2S - ০.০১ mg/ L
১৩. আয়রন - ০.১ - ০.২ mg/L
১৪. পানির স্বচ্ছতা - ২৫ - ৩৫ সে.মি.
১৫. পানির গভীরতা - ৩ - ৪ ফুট
১৬. ফলকের ঘনত্ব - ৩০০ গ্রাম / টন
১৭.TDS - ১৪০০০ - ১৮০০০ mg/L
১৮. লবণাক্ততা - ৩ - ৫ ppt

পানিতে ফ্লক তৈরিঃ-প্রথম ডোজে ৫ ppm প্রেবায়োটিক, ৫০ ppm চিটাগুড়, ৫ ppm ইস্ট, পানি প্রতি টনের জন্য ১ লিটার, একটি প্লাস্টিকের বালতিতে অক্সিজেন সরবরাহ করে ৮- ১০ ঘন্টা কালচার করে প্রয়োগ করতে হবে। ২য় দিন থেকে ১ppm প্রোবায়োটিক, ৫ ppm চিটাগুড়, ১ ppm ইস্ট, প্রতি টনের জন্য ১ লিটার পানি দিয়ে উপরের সময় ও নিয়মে কালচার করে প্রতি দিন প্রয়োগ করতে হবে।
বায়োফ্লকের এক্টিভিটি পর্যবেক্ষণঃপানিতে যথাযথ পরিমাণ ফ্লক তৈরি হলে-
১. পানির রং সবুজ বা বাদামী দেখায়।
২. পানিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ কণা দেখা যায়।
৩. পানির অ্যামোনিয়া পরীক্ষা করলে পানি অ্যামোনিয়া মুক্ত দেখায়।
৪. প্রতি লিটার পানিতে ০.৩ গ্রাম ফ্লকের ঘনত্ব পাওয়া যাবে।
৫. ক্ষুদিপানা দেওয়ার পর তাদের বংশ বিস্তার পরিলক্ষিত হয়।

ট্যাংক নির্মাণ:প্রথমে গ্রেড রড দিয়ে ট্যাংকের বৃত্তাকার খাঁচাটি তৈরি করতে হবে। যেই স্থানে ট্যাংকটি স্থাপন করা হবে সেই জায়গাতে খাঁচার পরিধির সমান করে সিসি ঢালাই দিতে হবে। বৃত্তের ঠিক কেন্দ্রে পানির একটি আউটলেট পাইপ স্থাপন করতে হবে। এরপর খাঁচাটিকে ঢালাই মেঝের উপর স্থাপন করে মাটিতে গেঁথে দিতে হবে। মেঝের মাটি শক্ত ও সমান হলে ঢালাইয়ের পরিবর্তে পরিধির সমান করে পুরু পলিথিন বিছিয়েও মেঝে প্রস্তুত করা যায়। এরপর উন্নতমানের তারপুলিন দিয়ে সম্পূর্ণ খাঁচাটি ঢেকে দিতে হবে। তার উপর পুরু পলিথিন দিয়ে আচ্ছাদিত করে তাতে পানি মজুদ করতে হবে।

এরেটর পাম্পঃ বায়োফ্লক ট্যাংকে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়ার জন্য একটি এরেটর পাম্প স্থাপন করতে হবে। ছয় ফুট ব্যাসার্ধের এবং চার ফুট উচ্চতার একটি ট্যাংকে প্রায় ত্রিশ হাজার শিং মাছ চাষ করা যাবে।
এ ব্যাপারে সরাসরি সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জের উপজেলা মৎস্য দপ্তরে।
সার্বিক সহযোগিতায়ঃ- এ, এস, এম, সানোয়ার রাসেল সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ঈশ্বরগঞ্জ।
Image result for বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ
""বায়োফ্লক এর দরকারী উপকরন পিএইচ মিটার, টিডিএস মিটার,
অ্যামোনিয়া টেস্ট কিট এবং প্রোবায়োটিক ঢাকার কাটাবন মাকের্ট, টিকাটুলি সায়েন্টফিক মাকের্ট ও গুলিস্তান কাপতান বাজার কমপ্লেক্স এ সব পাবেন।""
বায়োফ্লোকের প্রধান উপাদান হলো হিটারোট্রফিক ব্যাকটিরিয়া। বায়োফ্লোকের কাজ হল মাছ বা চিংড়ির অতিরিক্ত খাদ্যের পঁচন এবং মলমূত্র থেকে উৎপাদিত নাইট্রোজেনাস (অ্যামোনিয়া NH3, নাইট্রাইট NO2) কমানো। বায়োফ্লকে হিটারোট্রফিক ব্যাকটিরিয়া বিষাক্ত অ্যামোনিয়াকে খেয়ে জৈব প্রোটিন কনা বা ফ্লক সৃষ্টিতে সহয়তা করে। এই জৈব কনা বা ফ্লক গুলো মাছ বা চিংড়ি তাদের খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। ফলে মাছ বা চিংড়ি দ্রুত বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। বায়োফ্লক ট্যাংকে অ্যামোনিয়াকে ভাঙ্গতে হিটারোট্রফিক ব্যাকটিরিয়ার শক্তি যোগানোর জন্য কার্বন মিডিয়া যোগ করতে হয়। যেহেতু অ্যামোনিয়ার সাথে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিক্রিয়া হওয়ার জন্য কার্বন প্রয়োজন। মাছের সম্পূরক খাদ্য ছাড়াও, হেটেরোট্রফিক ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদন উৎসাহিত করতে এবং নাইট্রোজেনাস বর্জ্য কমাতে কার্বনের একটি পরিপূরক উৎসের যোগান ট্যাংকে যোগ করতে হয়। মাছ বা চিংড়ির খাদ্যে কার্বন ও নাইট্রোজেন (C: N) অনুপাত প্রায় ৭-১০: ১ অনুপাত রয়েছে । আর হিটারোট্রফিক ব্যাকটেরিয়া প্রায় ১২-১৫:১ অনুপাতে বেশি সক্রিয় থাকে। অনুপাত বাড়াতে এবং ব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধির জন্য বায়োফ্লক ট্যাংকে কার্বন উৎস চিনি বা একটি মিশ্রিত মিডিয়া যোগ করতে হয়। এই মিডিয়াতে গুড়, চিনি, সুক্রোজ এবং ডেক্সট্রোজ অন্তর্ভুক্ত থাকে। আবার কিছু উৎপাদক গ্লিসারিন ব্যবহার করে থাকে। কার্বন উৎসের ফিড এবং সংমিশ্রণের প্রোটিন সামগ্রীর সাথে প্রয়োগের হারগুলি পৃথক হবে, তবে একটি প্রমাণীত ও ভাল নিয়ম হলো প্রতি কেজি খাদ্যের জন্য, প্রায় ০.৫-১ কেজি কার্বন উৎস প্রয়োজন হয়। বেশি প্রোটিন যুক্ত খাদ্যে বেশি পরিমাণে কার্বনের পরিপূরক প্রয়োজন। কার্বন যোগ করার আসল নিয়ম হলো ট্যাংকের পানির অ্যামোনিয়া এবং নাইট্রাইটের মাত্রা বিবেচনা করে। একটি বায়োফ্লোক প্রজেক্ট সফল ও দক্ষতার সাথে পরিচালনার জন্য বায়োফ্লোক পরিচালনা সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে হবে। তবে কৌশলটি তেমন জটিল নয়। বায়োফ্লোক সম্পর্কে সবচেয়ে সহজ এবং সহজে বুঝার জন্য যে প্রক্রিয়াটির সঠিক ব্যাখ্যা যানতে হবে তাহলোঃ - হিটারোট্রফিক ব্যাকটিরিয়া মাছের খাদ্য ও মলমূত্র থেকে উৎপাদিত বিষাক্ত অ্যামোনিয়াকে ভেঙ্গে বা খেয়ে ব্যাকটেরিয়া যুক্ত জৈবপুষ্টি কণায় রূপান্তরিত করে। উৎপাদিত ফ্লক গুলোর মধ্যে কিছু পরস্পরের খাদ্য হিসাবে ব্যবহ্নত হয়। যেমন- প্রোটোজোয়া এবং কিছু ক্ষুদ্র অণুজীব দ্বারা কিছু অত্যান্ত পুষ্টিকর জৈবকণা খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করার ফলে তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়ে, জৈববস্তুপুঞ্জে রূপান্তরিত হয়। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণুজীব ও প্রোবায়টিক ব্যাকটেরিয়াগুলি ছোট ছোট ফ্লকে কলোনি সৃষ্টি করে থাকে এবং তা মাছ ও চিংড়ির খুবই পুষ্টিকর খাবার হিসাবে ব্যবহ্নত হয়। অপরদিকে এরা বায়োফ্লোক পদ্ধতির পানির গুণগতমান ঠিক রাখতে সহায়তা করে এবং পানি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা কমায়। বায়োফ্লক ট্যাংকে প্রাকৃতিক ভাবে ২০% খাদ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। ফলে অতিরিক্ত খাদ্যের চাহিদা যেমন কমে তেমনি, জৈব সুরক্ষা ঠিক রাখতে সহায়তা করে।

লেখক : সদর আমীন মৎস্য প্রযুক্তিবিদ।

Comments

  1. Replies
    1. আমি ঢাকাতে থাকি।আমি সরকারি ভাবে বায়োফ্লক এর টেনিং করতে চা। কোথায় যোগাযোগ করবো দয়া করে জানাবেন

      Delete
  2. I NEED TO KNOW ABOUT TRAINING HAND TO HAND

    ReplyDelete
  3. এ বিষয়ে কোন জায়গাতে ট্রেনিং করানো হলে জানাবেন? ট্রেনিং করে বায়োফ্লক পদ্ধিতে মাছ চাষ করতে চায়।

    ReplyDelete
  4. অামি বড় পরিসরে ব্যবসায়টি করতে চাই। বাংলাদেশের কোথায় এই বিষয়ে উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্হা অাছে জানালে সুবিধা হতো।

    ReplyDelete
  5. চট্টগ্রাম কোথায় করা যায়

    ReplyDelete
    Replies
    1. জানতে পারলে জানাবে, আমিও জানতে ইচ্ছুক।

      Delete
  6. সাভারে কোথায়
    উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্হা অাছে জানালে সুবিধা হতো।

    ReplyDelete
  7. ঢাকায় কোথায় উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে জানাবেন

    ReplyDelete
  8. বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় বায়ুফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষেরবপ্রশিক্ষ ণকেন্দ্র আছে দয়াকরে জানাবেন....? আমি তাহলে খুব উপকৃত হবো।

    ReplyDelete
  9. ময়মনসিংহে কোথায় ট্রেনিং হয় জানাবেন ০১৯৯৯৩২৮০৮০

    ReplyDelete
  10. চট্টগ্রামের কোথায় ট্রেনিং নেওয়া যাবে?

    ReplyDelete
  11. হবিগঞ্জ বা সিলেটের কোথাও ট্রেনিং করলে জানাবেন প্লিজ। আমি ট্রেনিং নিয়ে মাছচাষকরতে চাই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. চাঁপনইনবাবগঞ্জ কি এর টেনিং সেন্টার কোথাও অাছে কি

      Delete
  12. চট্টগ্রামের কোথায় ট্রেনিং নেওয়া যাবে?

    ReplyDelete
  13. আমি ট্রেইনিংকরতেআগ্রহী। আমাকে জানাবেন ।। ০১৭১১৫৩৪১২৯

    ReplyDelete
  14. খুলনায় কোথায় চাষ হয়? খুলনায় করতে চাই। কিভাবে হেল্প পেতে পারি?

    ReplyDelete
  15. আমি বায়োফল্গোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ
    করা শিখতে ছায়, প্লিজ আমাকে জানাবেন,০১৭৬৩৫৮৭৭৮৪.

    ReplyDelete
  16. নদীয়ার কোথায় biofloc পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য training দেওয়া হয় ।

    ReplyDelete

Post a Comment